লজেন্স ব্যবসা একটি সহজ, লাভজনক এবং তুলনামূলকভাবে কম পুঁজিতে শুরু করা যায় এমন ব্যবসা। এটি গ্রামের হাটে, শহরের দোকানে কিংবা স্কুলের পাশে খুব জনপ্রিয়। নিচে লজেন্স ব্যবসা সম্পর্কে বিস্তারিত আলোচনা করা হলো:
🔶 লজেন্স ব্যবসার ধরন:
- খুচরা বিক্রি – দোকানে বা ফুটপাতে বিক্রি করা।
- পাইকারি ব্যবসা – অন্যান্য দোকানদারদের সরবরাহ করা।
- ব্র্যান্ডেড লজেন্স ডিস্ট্রিবিউশন – বড় কোম্পানির (যেমন: Olympic, Igloo, Nestlé) লজেন্স ডিস্ট্রিবিউট করা।
- নিজস্ব লজেন্স উৎপাদন – নিজে লজেন্স তৈরি করে বাজারজাত করা।
🔶 ব্যবসা শুরু করতে যা লাগবে:
✅ ১. পুঁজি:
- ছোট পরিসরে: ৫,০০০–২০,০০০ টাকা (খুচরা)
- মাঝারি পরিসরে: ৫০,০০০–১ লক্ষ টাকা (পাইকারি বা ডিস্ট্রিবিউশন)
- বড় পরিসরে: ২ লক্ষ+ টাকা (উৎপাদন শুরু করতে)
✅ ২. জায়গা:
- ছোট দোকান, কিয়স্ক, ফুটপাত বা বাজারে স্টল।
- উৎপাদনের জন্য আলাদা ছোট ফ্যাক্টরি স্পেস প্রয়োজন।
✅ ৩. মালামাল:
- বিভিন্ন ধরনের লজেন্স (ফ্লেভার অনুযায়ী: পুদিনা, মিষ্টি, মেহেদি, আদা, ঝাল)
- বয়াম, ট্রে, প্যাকেট
- কাঠ বা গ্লাস শোকেস
🔶 কোথা থেকে মাল কিনবেন:
- পাইকারি মার্কেট: ঢাকা (চাঁদনি চক, মিটফোর্ড), চট্টগ্রাম (খাতুনগঞ্জ), রাজশাহী, খুলনার পাইকারি বাজার।
- অনলাইন পাইকারি সাইট: B2B ই-কমার্স (e.g., Bikroy B2B, Daraz Wholesale, Alibaba Express)
- স্থানীয় ডিস্ট্রিবিউটরদের সাথে চুক্তি করে।
🔶 লাভের হিসাব (প্রায়):
পণ্যের ধরন | খুচরা ক্রয় মূল্য | বিক্রয় মূল্য | প্রতি পিস লাভ |
---|---|---|---|
সাধারণ লজেন্স | ৫০ পয়সা | ১ টাকা | ৫০ পয়সা |
ব্র্যান্ডেড লজেন্স | ৮০ পয়সা | ১.৫ টাকা | ৭০ পয়সা |
দ্রষ্টব্য: বেশি বিক্রি হলে লাভ দ্রুত বাড়বে।
🔶 মার্কেটিং টিপস:
- স্কুল-কলেজ, বাসস্ট্যান্ড, পার্কের পাশে বিক্রি করুন।
- ছোট বাচ্চাদের আকর্ষণ করার জন্য রঙিন প্যাকেট বা নতুন স্বাদের লজেন্স আনুন।
- ফ্রি টেস্টিং বা ১০ টাকায় ১২ পিস অফার দিন।
🔶 ঝুঁকি ও চ্যালেঞ্জ:
- মেয়াদ উত্তীর্ণ পণ্যের ক্ষতি।
- বেশি প্রতিযোগিতা।
- দোকান ভাড়ার চাপ (লোকেশন অনুযায়ী)।
🔶 নিজের লজেন্স তৈরি করতে চান?
উপকরণ:
- চিনি, গ্লুকোজ, বিভিন্ন ফ্লেভার (লেবু, পুদিনা, আদা)
- ফুড কালার, সিরাপ, ফ্লেভার এক্সট্রাক্ট
- ছাঁচ বা কাটিং মেশিন
প্রক্রিয়া:
- সিরাপ তৈরি করা
- নির্দিষ্ট ফ্লেভার দিয়ে মিশ্রণ তৈরি
- ছাঁচে ঢেলে ঠান্ডা করা
- প্যাকেটিং
ব্যবসাটি কেমন ঃ
লজেন্স ব্যবসা ছোট মূলধন দিয়ে শুরু করে ধীরে ধীরে বড় করা সম্ভব। আপনি যদি সঠিক জায়গায় বিক্রি করেন, গুণগত মান বজায় রাখেন এবং ক্রেতার মন বুঝে চালান, তাহলে এটি হতে পারে একটি লাভজনক ও টেকসই ব্যবসা।